LifeHacks

গরিব হল তারা, যাদের সব কিছু খুব বেশি বেশি দরকার। কারণ, যাদের সবকিছু খুব বেশি বেশি লাগে, তারা কখনোই জীবনের প্রতি সন্তুষ্ট হয় না। আই অ্যাম ফ্রুগাল, নট পুয়োর। আমি স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে চাই আর আমি সেভাবেই বেঁচে আছি। লিভিং ফ্রুগালি ইজ এ ফিলোসফি অব লাইফ, বাট আই অ্যাম নট পুয়োর।” -হোসে মুহিকা ( উরুগুয়ের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট)।

আমার করোনা পজিটিভ না হয়েও সাড়ে চার মাস বন্ধী থাকার কারণ নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন!

 করোনা ভাইরাস 🌞☀️পজিটিভ-সৌভাগ্য নাকি দুর্ভাগ্য

সিঙ্গাপুরে যেসব ভাইয়েরা বা বন্ধু্রা আছেন, আমার লেখাটি কেউ নেগেটিভলি নেবেন না। ৪ মাস ১১ দিন আমরা একটি বিল্ডিং এর ভিতর বন্দী বা লকডাউনে আছি । আমাদের কিন্তু করোনাভাইরাস পজিটিভ ছিল না বা এখনও নেই ।অনেকবার টেস্ট করেছে কিন্তু প্রত্যেক বারই নেগিটিভ পেয়েছে।
তাহলে করুনার ভাইরাস আক্রান্ত না হয়েও কেন আমরা সাড়ে চার মাস যাবত একটি বিল্ডিং এ বন্ধী থাকবো? এই প্রশ্নটিই অনেকেই করে, আজ সেই বিষয়টা নিয়েই আমি কয়েকটি কথা লিখছি।
এটি সিংগাপুরে, ওয়েস্ট লাইট ডরমিটরি। ৯টি বিল্ডিং।৮টি ছোট এবং ১টি বড় ১৮তলা আর আমি এইটাতেই থাকি।
প্রায় ৬ হাজার লোকের বসবাস।
প্রথম যেদিন থেকে করোনাভাইরাস এর শনাক্ত শুরু হয় ঠিক সেদিন থেকেই আমরা লকডাউন অবস্থায় পরি এবং আমাদেরকে একটা নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতার মধ্যে চলাচলের পরামর্শ দেয়া হয় এবং আমরা সেটা মেনেই দিন অতিবাহিত করতে থাকি এবং নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য সবসময় চেষ্টা করতে থাকি। শুরুর দিক থেকেই যে সকল লোক আক্রান্ত হওয়া শুরু করে তারা ধীরে ধীরে আমাদের বিল্ডিং এবং আমাদের পাশের আরও আটটি বিল্ডিং রয়েছে সেখান থেকে আক্রান্ত ব্যক্তি বেরিয়ে যেতে থাকে-এভাবে চলতে থাকে এক মাস,দুই মাস,তিন মাস।
আমি এবং আমার রুমের যারা আছে আমরা কেউই অসুস্থ বোধ করি না এবং আমরা নিজেদেরকে সবসময় নিরাপদে রেখেছি যাতে আক্রান্ত নাহই !
তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম আমাদের পাশে যে, আরো ৮টি বিল্ডিং ছিল সেগুলো মোটামুটি খালি হয়ে গিয়েছে ।
সবাই বাহিরে চলে গিয়েছে করোণা আক্রান্ত হয়ে এবং তারা কেউ ১মাস কেউ তিন মাস চিকিৎসা নিয়ে রিকভারি করে ধীরে ধীরে আবার তাদের অনেকেই বিল্ডিংয়ে ফিরতে শুরু করেছে ।ইতিমধ্যে তাদের ব্লগগুলো যখন খালি হয়ে গিয়েছিল তখন ডরমেটরি কর্তৃপক্ষ সেই ব্লগগুলো ডিজইনফেকশন করে নেয় এবং বাইয়ো সেকিউরিটি নিশ্চিত করে।
প্রথমদিকে যারা আক্রান্ত হয়েছিল তারা রিকভার করে তাদের বিল্ডিংয়ে ফিরে আসে ও অনেকেই বাহিরে হোটেল এ বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে থেকে কাজ শুরু করে দেয়।
এভাবে শুধু আমাদের বিল্ডিং ছাড়া বাকি আটটি বিল্ডিং পুরোপুরি করোনা মুক্ত করা হয় এবং ওই আটটি বিল্ডিংয়ের লোকগুলো কাজে যাবার পরামর্শ দেয়া হয় এবং তারা কাজ শুরু করে দেয়
এ অবস্থায় আমাদের বিল্ডিংএ( ১৮তলা)প্রচুর লোক অবশিষ্ট থাকায় আমাদেরকে চার মাস পরে কোভিদ ১৯টেস্ট শুরু করে এবং ফলাফল অনুযায়ী আমাদের বিল্ডিং-এ কোন কোন রুমে দুইজন,কোন কোন রুমে একজন করে করোনা পজিটিভ পায়!এতে ডরমিটরি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমাদের বিল্ডিং (১৮০০লোক প্রায়)পুরোপুরি লকডাউন করে দেয়- এবং আমাদের রুমের দরজা পর্যন্ত আটকে দেয় ১৪ দিন !এভাবে রুমে আটকে থাকার পর ভেবেছিলাম যে আমাদের বের হতে দিবে -কিন্তু না এখন আবার শুনতে পাচ্ছি যে আরো কিছুদিন থাকতে হবে এভাবে বন্ধী অবস্থায় ।
এই মুহূর্তে আমাদের এতটাই খারাপ লাগছে যে বলে কিংবা লিখে বোঝানো যাবে না! সময় অতিবাহিত হয়না। দেশে বারবার ফোন করি কিন্তু বলার কিছু থাকে না। সেই কারণেই ভাবছি যে আমরা কেমন আছি বন্ধুদের জানাই! আশা করি -আমার প্রিয় বন্ধুরা !




আমার করোনা পজিটিভ না হয়েও সাড়ে চার মাস বন্ধী থাকার কারণ নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন!
সবাইকে ধন্যবাদ- সবাই ভাল থাকবেন! আমাদের জন্য দোয়া করবেন ! আমরা যেন করোণায় আক্রান্ত না হই এবং আক্রান্ত না হয়ে এভাবেই যেন আমরা এখান থেকে বের হয়ে যেতে পারি এবং কাজ শুরু করে দিতে পারি ।
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ-আমার এই লেখাটি পড়ার জন্য!
আল্লাহ হাফেজ

কোন মন্তব্য নেই

if you have any doubt pls sms.

fpm থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.